ফয়সাল রহমান জনি, গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি ❑
গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী পৌর শহরের হারুন সুপার মার্কেটে মেসার্স ফারিহা ফার্মেসিতে প্রায় ২০ হাজার টাকা মূল্যের ফিজিশিয়ান স্যাম্পল জব্দ করা হয়েছে।
বুধবার (২০শে নভেম্বর) সকালে গোপন সংবাদে ভিত্তিতে ঔষধ প্রশাসন গাইবান্ধার ঔষধ তত্তাবধায়ক মোঃ মেহেদী আফজাল পল্লব অভিযান পরিচালনা করেন। স্যাম্পল ওষুধ বিক্রি বন্ধ করতে ফার্মেসিগুলোতে অভিযান চালানো হয়।
অভিযানে হারুন সুুপার মার্কেটের মেসার্স ফারিহা ফার্মেসিতে স্যাম্পল ঔষধ জব্দ করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হবে। অভিযান পরিচালনা দেখে বাকি পৌর শহরের অন্যান্য ফার্মেসিগুলো বন্ধ করে দোকানীরা দ্রুত সটকে পরেন।
অভিযানকলে ঔষধ তত্তাবধায়ক মোঃ মেহেদী আফজাল পল্লব বলেন, এই ঔষধ গুলো উৎপাদনকারী কোম্পানির পক্ষ থেকে বাজারে ছাড়ার আগে ট্রায়ালের উদ্দেশ্যে চিকিৎসকদের দেওয়া হয়। এবং এসব স্যাম্পল ওষুধের ক্ষেত্রে সরকারি রাজস্ব দিতে হয় না। বিনামূল্যে দেওয়া এসব ওষুধ ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ। কিন্তু অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এ ধরনের ওষুধ বিক্রি করছেন। দীর্ঘ দিন ধরেই পলাশবাড়ী বিভিন্ন ফার্মেসিতে স্যাম্পল ওষুধের কেনাবেচা চলে আসছে। এতে একদিকে যেমন সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে, অন্যদিকে ট্রায়ালে থাকা এসব ওষুধ সেবনে প্রতারিত হচ্ছেন ক্রেতারা। এসব ওষুধের মোড়কে লেখা ‘ফিজিশিয়ান স্যাম্পল, বিক্রি নিষিদ্ধ’। তবে দোকানিরা এগুলো বিক্রির জন্য কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছেন। ওষুধের মোড়ক পাল্টে বিক্রয়যোগ্য ওষুধের মোড়কে রেখে এসব ওষুধ বিক্রি করা হচ্ছে। এটি অপরাধ, স্যাম্পল ওষুধের ক্রয়-বিক্রয় বন্ধে ঔষধ প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অপরদিকে ফার্মেসি মালিকরা দাবী করেন, পলাশবাড়ীতে স্যাম্পল ওষুধ বিক্রির একটি চক্র রয়েছে। সরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকরা বেশি ফিজিশিয়ান স্যাম্পল পেয়ে থাকেন। কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে চুক্তি থেকে চিকিৎসকরা প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ স্যাম্পল পান। চিকিৎসকরা টাকার বিনিময়ে এসব ওষুধ ফার্মেসিতে বিক্রি করে দেন। সরাসরি চিকিৎসকদের মাধ্যমে বা দালাল চক্রের মাধ্যমে ওষুধগুলো খোলা বাজারে আসে।
উল্লেখ্য, পলাশবাড়ী পৌর শহর সহ উপজেলা জুড়ে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে নকল ও বিদেশী নিষিদ্ধ ঔষধ গোপনে ক্রয় বিক্রয় অব্যহত ভাবে চালিয়ে যাচ্ছে একটি চক্র। বেশীর ভাগ দোকান খুঁজলে ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ পাওয়া যাবে। আবার কেউ গোপন গুদাম ও বসতবাড়িতে রেখে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। পলাশবাড়ীতে এর আগেও একাধিকবার একাধিক ব্যক্তি ভেজাল ঔষধসহ আটক ও গ্রেফতার হয়ে হাজত বাস করেছেন। উপজেলার সর্বস্তরের সচেতন মানুষ ঔষধ প্রশাসনের নিয়মিত অভিযান পরিচালনার দাবী জানান।
Leave a Reply