1. admin@dainikgoyendarchokh.com : goyadmin :
ডোমার হানাদার মুক্ত দিবস আজ - দৈনিক গোয়েন্দার চোখ
বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫, ০৮:৪৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

ডোমার হানাদার মুক্ত দিবস আজ

  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৭৬ বার শেয়ার হয়েছে

আজমির রহমান রিশাদ, ডোমার প্রতিনিধি : ১৯৭১ সালের ৬ই ডিসেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অগ্রণী ভূমিকায় শত্রুমুক্ত হয় নীলফামারীর ডোমার উপজেলা। এরপর থেকে প্রতিবছরের এই দিনকে ‘ডোমার হানাদার মুক্ত দিবস’ হিসেবে পালন করে ডোমারবাসী।

মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ৩রা ডিসেম্বর ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট ইকবাল রশিদের নেতৃত্বে ডোমারের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শমসের আলী, ডিমলার বীর মুক্তিযোদ্ধা রশিদুল ইসলাম সহ একটি দল ডোমার উপজেলার গোমনাতী হয়ে বোড়াগাড়ী মুক্তকরণে এগিয়ে আসে।

৪ঠা ডিসেম্বর ভারতীয় মিত্র বাহিনীর মেজর ছাতোয়ানের নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুর রহমান সহ বেশকিছু মুক্তিযোদ্ধা ডোমার মুক্তকরণের অপারেশনে যোগ দেন।

৫ই ডিসেম্বর ক্যাপ্টেন নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে রংপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ গোলাপ, ভোগডাবুরীর আব্দুল জব্বার কানু, আমিনুর রহমান মাস্টার গোসাইগঞ্জ হয়ে সীমান্তবর্তী চিলাহাটি এলাকা মুক্ত করে জোড়াবাড়ী হয়ে বোড়াগাড়ী হাসপাতালের (উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স) উত্তরদিকে হলদিয়াবন ও বুদলিরপাড় এলাকায় সমবেত মুক্তিবাহিনীর সাথে যোগ দেয়।

সেদিন পাকবাহিনীর সাথে তুমুল গোলাগুলি ও বোমা বর্ষণ হয় মুক্তিযোদ্ধাদের। এতে বেশ কয়েকজন পাকসেনা নিহত হলে, রাত ২টার দিকে মুক্তিবাহিনীদের পথ রোধ করতে দেওনাই সেতু (বোড়াগাড়ী ব্রিজ) ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেয় পাকবাহিনী। এছাড়া সেদিন রাতেই পশ্চিম বোড়াগাড়ীর উত্তরপাড়ায় হামলা চালিয়ে ৭ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে হানাদাররা। এরপর তারা সোনারায় হয়ে নীলফামারীর দিকে পিছু হটে। তাদের অনবরত গোলা বর্ষণে বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন।

অবশেষে ৬ই ডিসেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অসীম সাহসিকতায় ডোমার উপজেলা পাক হানাদার মুক্ত হয়। ডোমার মুক্তকরণের অগ্রসৈনিক ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শমশের আলী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আমিনুর রহমান। মুক্তিযুদ্ধের ৬নং সেক্টর কমান্ডার খাদিমুল বাশারের নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধারা লাল-সবুজের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে ডোমারকে শত্রুমুক্ত ঘোষণা করেন।

সেদিন বাংলাদেশের পতাকা হাতে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ রাস্তায় নেমে পড়ে। স্লোগানে স্লোগানে ভারী হয়ে উঠে ডোমারের রাজপথ।

ডোমার উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সহকারী কমান্ডার (সাংগঠনিক) মোঃ শসসের আলী জানান, আমরা ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট ইকবাল রশিদের নির্দেশে বোড়াগাড়ী হাসপাতালের পাশে আমরা একত্রিত হই। ভোরের দিকে মেজর ছাতোয়ান ও মুক্তিবাহিনীর প্লাটুন কমান্ডার আমিনার রহমান আমাদের সাথে যোগ দেয়। এরপর ৬ই ডিসেম্বর সকালে ডোমার শহরে প্রবেশ করে হানাদার মুক্ত করি। সেসময়কার ৬নং সেক্টর কমান্ডার খাদিমুল বাশারের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা বিজয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পাকহানাদার বাহিনীর অত্যাচারে ডোমারের অসংখ্য মানুষ নির্যাতনের শিকার সহ তাদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। লুটপাট করা হয় সবকিছু।

ডোমার উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুল জব্বার বলেন, মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনী ডোমারের নিরীহ মানুষের উপর হামলা করে তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। হত্যা করে অসংখ্য মানুষকে। তাদের নির্যাতনে অনেকেই পঙ্গুত্ব বরণ করেন। মুক্তিযুদ্ধ হলো আমাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ অধ্যায়। মুক্তিযুদ্ধের কথা মনে পড়লে এখনো মনে শিহরন জাগে।

দিবসটিতে জাতির সূর্য সন্তান সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছেন ডোমারবাসী।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2019
কারিগরি সহযোগিতায়: জাগো হোষ্টার বিডি