1. admin@dainikgoyendarchokh.com : goyadmin :
দুমকির এক বিদ্যালয়ে ৯ বছর পর চালু হলো ভোকেশনাল কারিগরি শাখা - দৈনিক গোয়েন্দার চোখ
শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ১১:১৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ডোমারে চার দফা দাবিতে কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্টস সমিতির মানববন্ধন সরকারি নির্দেশনা যথাযথ ভাবে পালন করছেন না প্রধান শিক্ষক ২৪ মে, তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ সফল করতে নীলফামারী জেলা ছাত্রদলের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত বোয়ালখালীতে ৫০ শয্যার হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ রোগী পঞ্চগড়ে ৩ শিক্ষার্থী ও ১৩ শিক্ষক নিয়ে চলছে মাদরাসা জলঢাকায় এনসিপির কার্যালয় উদ্বোধন দিনাজপুরে লিচুর বাম্পার ফলন হাকিমপুরে পেশাদার চোরের ধারালো ছোরার আঘাতে জখম এক নারী ডোমারে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত-১ সংগীতশিল্পী বিধান দাস ও দোলন জলদাসকে বিনয়বাঁশী শিল্পীগোষ্ঠীর অভিনন্দন

দুমকির এক বিদ্যালয়ে ৯ বছর পর চালু হলো ভোকেশনাল কারিগরি শাখা

  • প্রকাশিত: শনিবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৩২ বার শেয়ার হয়েছে

দুমকি প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার উত্তর শ্রীরামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল কারিগরি শাখা দীর্ঘ ৯ বছর পর আবার চালু হয়েছে।

২০০৪ সালে ইঞ্জিনিয়ার কামাল হোসেনের একক প্রচেষ্টায় শুরু হওয়া এই শাখাটি ২০১৫ সালে বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু এবার তার নিরলস চেষ্টায় এটি আবার কার্যক্রম শুরু করেছে, যা স্থানীয়দের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। ২০১৫ সালের জুন মাসে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হন ইঞ্জিনিয়ার কামাল হোসেন। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে তাকে প্রধান আসামি করে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হয়।

এর ফলে তিনি প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করতে না পারায় শাখাটি বন্ধ হয়ে যায়। শাখা বন্ধ হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা কারিগরি শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়, যা এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তবে ইঞ্জিনিয়ার কামাল হোসেন হাল ছাড়েননি। ২০০৪ সালে ইঞ্জিনিয়ার কামাল হোসেন নিজের পিতার জমি বিক্রি করে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল কারিগরি শাখা চালু করেন।

তিনি নিজে ইন্সট্রাকটর হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। তার লক্ষ্য ছিল, স্থানীয় শিক্ষার্থীদের কারিগরি দক্ষতা প্রদান করে কর্মসংস্থানের উপযুক্ত করে গড়ে তোলা। ১২ বছরের এই যাত্রায় শাখাটি থেকে প্রায় আড়াইশত শিক্ষার্থী পাস করে বের হয়। তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন পেশায় সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন।

২০২৪ সালের ৫ই আগস্টে আওয়ামী লীগের পতনের পর ইঞ্জিনিয়ার কামাল হোসেন আবার উদ্যোগ নেন। তিনি স্থানীয় প্রশাসন, শিক্ষা বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। তার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে অবশেষে ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ভোকেশনাল কারিগরি শাখাটি পুনরায় চালু হয়। বিদ্যালয়ের পুনরায় চালু হওয়ায় স্থানীয়রা উচ্ছ্বসিত।

এক অভিভাবক বলেন, আমাদের সন্তানরা আবার কারিগরি শিক্ষা পাবে। এটি তাদের ভবিষ্যৎ গড়ার সুযোগ দেবে। এলাকায় অমনোযোগী বা ঝরে পড়া যে সকল শিক্ষার্থী আছে তাদের জন্য ভোকেশনাল শাখাটি গুরুত্বপূর্ণ কাজে আসবে। তারা হাতে কলমে কারিগরি শিক্ষা পাবে। এই শাখাটির উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করি এবং পুনরায় এটি চালু করার জন্য আমি কামাল স্যারকে ধন্যবাদ জানাই। ইঞ্জিনিয়ার কামাল হোসেন বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি এটি চালু করেছি এমন কোনো বিধান নেই। এটি একটি প্রতিষ্ঠান চালু করেছে।

তবে উত্তর শ্রীরামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখাটির দায়িত্ব আমাকে দেওয়া হলে আমি আমার বাবার জমি বিক্রি করে নিজ অর্থায়নে বিশেষ চেষ্টায় এর অনুমোদন করাতে সক্ষম হয়েছিলাম। কোন কিছু করতে গেলে বাধা-বিপত্তির মুখে পড়তেই হয়। আমার নিয়োগ নিয়েও কিছুটা ঝামেলা হয়েছিল। তবে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে আমি এই প্রতিষ্ঠানে ইন্সট্রাকটর হিসেবে নিয়োগ পাই। এই শাখাটি কেন বন্ধ হয়ে যায়, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২০১৫ সালে আওয়ামী লীগ সরকার আমাকে একটি রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় আসামি করে। গ্রেফতার হওয়ার পর আমি নিজেকে দুমকিতে নিরাপদ মনে করিনি। তাই বাধ্য হয়ে ঢাকা চলে আসি।

এর ফলে ভোকেশনাল শাখাটি চালানোর মতো শিক্ষক না থাকায় সেটি বন্ধ হয়ে যায়। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২০২৪ সালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উত্তর শ্রীরামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এডহক কমিটির মাধ্যমে রেজুলেশন করে পুনরায় এর অনুমোদন আনি।

তিনি আরও বলেন, আমি কখনো হাল ছাড়িনি। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য এই শাখা চালু রাখা আমার দায়িত্ব। বর্তমানে ছাত্রছাত্রী ভর্তি কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তবে যদি প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত করতে পারি, তবেই আমার সফলতা পূর্ণতা পাবে। উত্তর শ্রীরামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল কারিগরি শাখার পুনরায় চালু হওয়া শুধু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পুনর্জন্ম নয়, এটি একটি এলাকার উন্নয়নের গল্প। এটি প্রমাণ করে, সঠিক প্রচেষ্টা এবং অদম্য ইচ্ছাশক্তি কীভাবে দীর্ঘদিনের প্রতিকূলতাকে জয় করতে পারে। এখন দেখার বিষয়, এই উদ্যোগ কীভাবে স্থানীয় শিক্ষার্থীদের জীবন বদলে দেয় এবং তাদের দক্ষতা উন্নয়নে ভূমিকা রাখে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2019
কারিগরি সহযোগিতায়: জাগো হোষ্টার বিডি