ফয়সাল রহমান জনি, গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি ❑
গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে মহদীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদ নিয়ে পলাশবাড়ী পৌর শহরে সন্ধ্যার পর থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টা যাবৎ বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় ককটেল বিস্ফোরণ, ইটপাককেল নিক্ষেপ, বিএনপি নেতাকর্মীদের দোকান, বাড়িঘর, ব্যক্তিগত চেম্বার ও বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে।
এতে উভয় পক্ষের আহত হয়েছেন প্রায় ১০ জন। আহতদের পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে বলে জানা যায়।
অতীতের শিক্ষা থেকে এসময় থানা পুলিশের নীরব ভূমিকায় পলাশবাড়ীবাসী বড় ধরণের হতাহতের ও সহিংসতা হতে রক্ষা পেয়েছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
বুধবার (২০শে নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে পলাশবাড়ী উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে উভয় দলের নেতাদের মধ্যে পক্ষে বিপক্ষে তর্ক বির্তক শুরু হওয়ায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনার সূত্রপাত হয়। পরে উভয় দলের নেতাকর্মীরা জড়ো হলে চৌমাথা মোড়ে ঘটে বিএনপি ও জামায়াত নেতাকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় পৌর শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
গোটা পৌর শহর অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণ মানুষ প্রান ভয়ে এদিক সেদিক ছুটে গিয়ে নিজেদের রক্ষা করে। দীর্ঘ সময় ধরে চলা সংঘর্ষে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দেশীয় অস্ত্রহাতে চৌমাথা মোড়ের রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে, পৌর শহরের কালীবাড়ী হাট সহ গুরুত্বপূর্ন মোড়গুলোতে মহড়া দেয় বিএনপি-জামায়াতের বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীরা। এতে সন্ধ্যার পরে পৌর শহরের ছোট বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলো বন্ধ হয়ে যায়।
পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
পলাশবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ জুলফিকার আলী সাংবাদিকদের জানান, বর্তমানে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর টহল জোরদারের পর থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় কোনো পক্ষ থেকে কেউ অভিযোগ করেনি।
উল্লেখ্য, পলাশবাড়ী উপজেলার মহদীপুর ইউপি চেয়ারম্যান পদটি শুন্য হওয়ায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন জামায়াত নেতা রাহিদুল ইসলাম বাবু। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর হতে পরিষদ পরিচালনায় অন্যান্য ইউপি সদস্যদের মুল্যায়ন না করায় ইউপি সদস্যরা অনাস্থা প্রস্তাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এবিষয়টি জানতে পেরে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রাহিদুল ইসলাম বাবু ও তার লোকজন ইউপি সদস্যদের নিকট জোড় পূর্বক অনাস্থা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর গ্রহন করে। এবিষয়টি তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক পন্থী ইউপি সদস্যগণ।
অপরদিকে ইউপি সদস্যদের বক্তব্য মিথ্যা দাবী করে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রাহিদুল ইসলাম বাবু গং। এরপর গত ১৯শে নভেম্বর (মঙ্গলবার) ৮ জন ইউপি সদস্য পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অনাস্থা প্রস্তাবসহ একটি অভিযোগ দাখিল করেন। এবিষয়টি নিয়ে উপজেলা পরিষদে আলোচনাকালে উভয় পক্ষের মাঝে তর্ক বির্তক হওয়ায় ঘটনায় পরবর্তীতে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের রুপ নেয়।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুর রহিম
০১৭৯৬৫১৭৮৭৩,০১৭১২৮৮৪৪০৯
goyendarchokh6@gmail.com