দিনাজপুর থেকে লিমন হায়দার— লিচুর রাজ্য হিসেবে পরিচিত দিনাজপুরে দিন-দিন লিচু চাষ বাড়ছে। প্রতিবছরই ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে লিচু চাষের জমির পরিমাণ। এখন সারাদেশে কমবেশি লিচু চাষ হলেও দিনাজপুরের লিচুর কদর একটু আলাদা। রসালো ফল লিচু অনেকের কাছে রসগোল্লা হিসেবে পরিচিত।
লিচুর কথা উঠলেই সবার আগে দিনাজপুরের কথা মনে পড়ে।এই জেলার বেদানা জাতের লিচুকে বলা হয় "লিচুর রাজা"। স্বাদ-গন্ধ-রস এবং মিষ্টতায় অনন্য এই লিচু পেয়েছে জিআই পণ্যের স্বীকৃতি। গত ৩০ এপ্রিল এই বেদেনা লিচু জি আই পণ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। দীর্ঘ সময় পর এই স্বীকৃতি পাওয়ায় আনন্দিত কৃষক ও বাগান মালিকরা।
দিনাজপুরে এবার মধু মাসের ফল লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে।তবে মাঝে কয়দিনের তাপদাহে কিছু লিচুর ক্ষতি হয়েছে।
লিচু চাষিরা জানান, প্রতিবছর দিনাজপুরের লিচু দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে। লিচুর ব্যবসায় লাভবান হওয়ায় প্রতি বছর জেলাতে লিচুর চাষ দিন-দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবহওয়া অনুকূলে থাকলেও প্রাকৃতিক আর কোন দুর্যোগ না হলে এবারো দিনাজপুরে রেকর্ড পরিমাণ লিচুর ফলন হবে বলে তাদের আশা।
দিনাজপুর কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক আফজাল হোসাইন জানান, দিনাজপুরে লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। এবার জেলায় ৫৪৯১ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ হয়েছে। এখান থেকে ৩৫ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আমরা এভারেজ প্রতিটি লিচুর মূল্য যদি ৪ টাকা ধরি, সে হিসাবে দিনাজপুরেই শুধু লিচু বিক্রি হবে ৯০০ কোটি টাকার উপরে। দিনাজপুরের লিচু সুস্বাদু ও মিষ্টি হওয়ায় দেশব্যাপী এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। দিনাজপুরের লিচুর মধ্যে চায়না, বেদেনা, বোম্বাই, মাদ্রাজি ও কাঠালী জাতের লিচু উল্লেখযোগ্য।দিনাজপুরে যেসব স্থানে লিচু চাষ হয় তার মধ্যে সদর, বিরল, চিরিরবন্দর, বীরগঞ্জ ও খানসামা উপজেলা বিখ্যাত।
লিচু চাষিরা বলছেন, কিছু লিচু চাষী বেশি লাভের আশায় সময়ের পূর্বেই অপরিপক্ক লিচু বাজারে তুলছেন। এসব লিচু সুস্বাদু ও মিষ্টি-পুষ্টিগুণ সম্পন্ন নয়। মাদ্রাজি লিচু ২শত থেকে সাড়ে ৩শত টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে চায়না থ্রি ও বেদেনা লিচু বিক্রি হচ্ছে ৭শত থেকে ৯শত টাকায়।
কৃষি বিভাগ বলছে, চায়না থ্রি, বেদেনা ও বোম্বে জাতের লিচু ২৫ মে'র পূর্বে নামানো উচিত নয়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, যদি বিষয়টিতে সরকারি মনিটরিং থাকতো তাহলে অসাধু ব্যবসায়ীরা এমনটা করতে পারতেন না। তাই সরকারি নজরদারি বাড়ানো উচিত।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ আব্দুর রহিম
০১৭৯৬৫১৭৮৭৩,০১৭১২৮৮৪৪০৯
goyendarchokh6@gmail.com